সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৩

সবাইকে সালাম। আশা করি সবাই ভাল আছেন ।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা সামাজিক যোগাযোগের জন্য ফেসবুকের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বর্তমানে ফেসবুকের সাথে পাল্লা দেয়ার জন্য গুগলও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট চালু করেছে, যা গুগল প্লাস নামে পরিচিতি লাভ করেছে। গুগল প্লাস নতুন হিসেবে চমক দেখাচ্ছে বটে, কিন্তু বর্তমানে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা ফেসবুকেই বেশি সময় কাটাচ্ছেন। কারণ ফেসবুকের রয়েছে প্রচুর ফিচার, যা ব্যবহারকারীকে ফেসবুকের দিকেই বেশি টানছে। ২০০৪ সাল থেকে শুরু করা ফেসবুক এখন এতটাই পরিণত যেকেউ ফেসবুকে সহজেই রেজিস্ট্রেশন করে ব্যবহার করতে পারছেন। এর বয়স ৭ বছরের বেশি হলেও অনেকেই ফেসবুক সম্পর্কে অনভিজ্ঞ। ফেসবুকের পরিচিতি তুলে ধরার জন্য গত সংখ্যায় ফেসবুকের বিভিন্ন ফিচার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। এ সংখ্যায়ও ফেসবুকের আরো কিছু ফিচার যেমন- অ্যাকাউন্ট সেটিংস, লিঙ্কড অ্যাকাউন্টের সাহায্যে ই-মেইলের সাথে ফেসবুকের যোগসূত্র স্থাপন, ফেসবুকে আপনার পার্সোনাল ডাটা আর্কাইভ করে ব্যাকআপ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, যা একজন নতুন/পুরনো ব্যবহারকারীকে ফেসবুক ব্যবহার সম্পর্কে আরো বেশি আগ্রহী করে তুলবে।

অ্যাকাউন্ট সেটিংস :
ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট প্রাইভেসির পাশাপাশি ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট সেটিংসও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অ্যাকাউন্ট সেটিংস থেকে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন। যেমন- ইউজার নেম, ই-মেইল অ্যাড্রেস, পাসওয়ার্ড, নেটওয়ার্কস, লিঙ্কড অ্যাকাউন্টস, ল্যাঙ্গুয়েজ ইত্যাদি।
লিঙ্কড অ্যাকাউন্টস :
লিঙ্কড অ্যাকাউন্টস ফেসবুকের একটি অসাধারণ ফিচার। এই অপশনের মাধ্যমে ওপেন আইডির সাহায্যে ফেসবুকের সাথে আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্টের যোগসূত্র তৈরি করতে পারবেন। অর্থাৎ যে ই-মেইল অ্যাকাউন্টের সাহায্যে ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন, সেই অ্যাকাউন্টটি এখানে যুক্ত করে দিয়ে ই-মেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করতে যদি www.facebook.com ব্রাউজারে টাইপ করে এন্টার প্রেস করেন, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুকে লগইন হয়ে যাবে। এর জন্য নতুন করে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেসবুকে লগইন করতে হবে না। এই ফিচারটির জন্য অন্য ই-মেইল অ্যাকাউন্টও এখানে যুক্ত করতে পারেন। এই ফিচারটি সহজেই চালু করতে পারবেন নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে :
ধাপ-১ :
আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করে ওপরের ডান পাশের Account থেকে Account Settings-এ ক্লিক করুন।
ধাপ-২ :
এখানে Linked Accounts নামের অপশনের ডান পাশে Edit নামে একটি লিঙ্ক রয়েছে, এই লিঙ্কে ক্লিক করুন। ফলে আপনার সামনে একটি ছোট উইন্ডো প্রদর্শিত হবে।
ধাপ-৩ :
ছোট উইন্ডোতে দেখুন লেখা আছে ‘If you are logged into one of the accounts below you will automatically be logged into Facebook.’ অর্থাৎ এই লেখার নিচের দিকে ড্রপডাউনে কিছু ই-মেইল সার্ভিস প্রোভাইডারের নাম রয়েছে (যেমন- Google, MySpace, Yahoo!, MyOPenID, Verisign PIP, OpenID… ইত্যাদি)। ওই নাম অনুযায়ী আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে যদি লিঙ্কড অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুকে লগইন হয়ে যাবেন। এখন যে ড্রপডাউন লিস্ট রয়েছে তাতে ই-মেইল অ্যাকাউন্ট সার্ভিসের নাম সিলেক্ট করে দিন। ধরুন, এখানে Google সিলেক্ট করা হয়েছে। এখন Link New Account নামে যে বাটন রয়েছে তার ওপর ক্লিক করলে একটি উইন্ডো প্রদর্শিত হবে ।
ধাপ-৪ :
এখানে আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ডটি টাইপ করে Confirm বাটনে ক্লিক করুন। এতে Click ‘Continue’ to link your OpenID account দিয়ে একটি মেসেজ প্রদর্শিত হবে। এখানে Continue বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-৫ :
ধাপ-৪ অনুসরণ করার পর আপনার সামনে আরেকটি উইন্ডো প্রদর্শিত হবে, যেখানে ই-মেইল অ্যাড্রেসের ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে বলবে। ই-মেইলের ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্টে একটি কনফার্মেশন মেসেজ যাবে।
ধাপ-৬ :
এবার ফেসবুক ও ই-মেইল অ্যাকাউন্ট থেকে লগআউট করুন। এবার ই-মেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করুন এবং অন্য একটি ট্যাব খুলে www.facebook.com টাইপ করুন। এতে দেখতে পাবেন ফেসবুকের আইডি ও পাসওয়ার্ড না দেয়ার পরও ফেসবুকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগইন হয়ে গেছে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য ডাউনলোড/ব্যাকআপ করা : ফেসবুকের এটিও একটি অন্যতম ফিচার, যা ব্যবহার করে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ডাটা ব্যাকআপ বা ডাউনলোড করে রাখতে পারবেন।
এই কাজটি করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
ধাপ-১ :
ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করে ওপরের ডান পাশের Account থেকে Account Settings-এ ক্লিক করুন।
ধাপ-২ :
একেবারে নিচের দিকে Download a copy of your Facebook data নামে একটি লিঙ্ক রয়েছে। এখানে Download a copy লিঙ্কে ক্লিক করুন। ফলে আপনার সামনে Download Your Information, Get a copy of what you’ve shared on Facebook মেসেজ দিয়ে একটি উইন্ডো প্রদর্শিত হবে।
ধাপ-৩ :
এখানে Start My Archive নামে একটি লিঙ্ক রয়েছে। এই লিঙ্কে ক্লিক করুন। এতে Request My Download নামে আরো একটি উইন্ডো প্রদর্শিত হবে। এখানে Start My Archive-এ ক্লিক করলে You will receive an email when your archive is ready for download মেসেজ দেবে। এখানে Okay বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-৪ :
Download Your Information, Get a copy of what you’ve shared on Facebook উইন্ডোতে We’re generating your personal archive. We’ll email you when it’s ready দিয়ে একটি মেসেজ প্রদর্শন করবে। অর্থাৎ যখন আপনার অ্যাকাউন্টে পার্সোনাল ডাটাগুলোকে আর্কাইভ করতে সক্ষম হবে, তখন ফেসবুক ওই সব ডাটার আর্কাইভ আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্টে মেইল করে পাঠিয়ে দেবে। ডাটাগুলো আর্কাইভ করা হয়ে গেলে কিছু সময় পর আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্টে Your download is ready মেসেজ দিয়ে একটি মেইল পাঠাবে ফেসবুক। ওখানে দেয়া লিঙ্ক থেকে আপনার আর্কাইভ করা ডাটা ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
সতর্কতা :
ফেসবুক ডাটা আর্কাইভ করার ক্ষেত্রে নিচের দিকে একটি সতর্কতা মেসেজ দেখতে পাবেন, যেখানে লেখা থাকবে ‘Your Facebook archive includes sensitive info like your private wall posts, photos and profile information. Please keep this in mind before storing, sending or uploading your archive to any other site or service.’ আপনার ফেসবুকের তথ্য নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে এ সতর্কতা আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
আশা করি, উপরের আলোচনা হতে উক্ত সার্ভিসসমূহ ব্যবহার করতে পারবেন।

Tagged:

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Comments